মানি ট্রান্সফার ব্যবসায়ীদের দুর্দিনে পাশে দাঁড়ালো ব্রিটেনের সোনালী ব্যাংক



ব্রিটেনে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়া মানি ট্রান্সফার ব্যবসা রক্ষায় এগিয়ে এসেছে সোনালী ব্যাংক ইউকে। এর ফলে গত প্রায় ছয় মাস মাস ধরে অনিশ্চয়তায় থাকা প্রায় এক ডজন রেমিটেন্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশে টাকা পাঠানো অব্যাহত রাখতে পারবে। এর মাধ্যমে বার্কলেজ ব্যাংক কর্তৃক হিসাব বন্ধের নোটিশপ্রাপ্ত বাংলাদেশি মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহের মানি এক্সচেঞ্জগুলোর এদেশে ব্যবসা বন্ধের যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল তা দূরীভূত হল। তবে এই সুবিধা বাঙালি মালিকানাধীন সবগুলো মানি রেমিটেন্স ব্যবসার জন্য প্রযোজ্য হবে না।
সোনালী ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, ব্রিটেনে অবস্থিত বাংলাদেশি ব্যাংকের মালিকানাধীন মানি এক্সচেইঞ্জ কোম্পানিগুলোই সোনালী ব্যাংকের এই সুবিধা নিতে পারবে। ইতোমধ্যেই সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্যস্থ পূবালী মানি এক্সচেইঞ্জকে তাদের হিসাব খোলার সম্মতি প্রদান করেছে। গত ১৮ অক্টোবর সোনালী ব্যাংকের অসবর্ণ স্ট্রিটস্থ শাখায় আনুষ্ঠানিকভাবে পূবালী মানি এক্সচেইঞ্জের সাথে এই সম্মতিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। আগামী সপ্তাহ থেকে হিসাব খোলার মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড পূবালী মানি এক্সচেঞ্জের লেনদেন কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে।
 আরও জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড ব্রিটেনে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহের অন্যান্য মানি এক্সচেঞ্জের হিসাব খুলবে। এসব মানি এক্সচেইঞ্জ ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেডের নিয়মাবলী ও শর্তাদি মেনে চলবে মর্মে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করেন সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেডের পক্ষে সিএফও ও পরিচালক মোঃ আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এবং পূবালী মানি এক্সচেইঞ্জের পক্ষে মহিউল ইসলাম। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেডের সিইও মোঃ আতাউর রহমান প্রধান, এম এল আর ও স্তিভেন স্মিথ, লন্ডন শাখার ব্যবস্থাপক তাওহিদুল ইসলাম, ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার এ এস এম এল রহমান, প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক আব্দুল হামিদ ও অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।  
এই পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের রেমিটেন্স প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্দিনে এগিয়ে এসে ব্রিটেন বাংলাদেশে বৈধভাবে অর্থ প্রেরণে শেষ ভরসার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো।  
এ বিষয়ে, সোনালী ব্যাংকের চীফ ফাইনানশিয়াল অফিসার মোঃ আমিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমরা আশা করব সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড যেমন বাংলাদেশের ব্যাংক মালিকানাধীন যুক্তরাজ্যস্থ মানি এক্সচেইঞ্জগুলোর প্রতি তার এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে তেমনি বাংলাদেশি ব্যাংকগুলো তাদের বৈদেশিক বাণিজ্য সংক্রান্ত ব্যবসা সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেডের মাধ্যমে পরিচালনা করে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে উভয় প্রতিষ্ঠান উপকৃত হবে এবং এর মাধ্যমে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বৃদ্ধি পাবে।
উল্লেখ্য, নানা ঝুঁকি বিবেচনায় বার্কলেজ ব্যাংক এ বছরের বছর ঢালাওভাবে ২৫০ প্রতিষ্ঠানের একাউন্ট বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।  গত মে মাসে ৬০ দিনের সময় দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নিলেও পরে নানা দাবি ও ক্যাম্পেইনের মুখে তিন দফা সময় বাড়ায় বার্কলেজ। এ সময় সোনালী ব্যাংক এসব ব্যবসার সহায়তার এগিয়ে এলেও তখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেই সুযোগ দেয়নি। কিন্তু সোনালী ব্যাংক হাল ছাড়েনি।  
এদিকে, এ নিয়ে ক্যাম্পেইনে নামেন বেথনাল গ্রীন এন্ড বোর এমপি রুশানারা আলী। তার সাথে যোগ দেন মো ফারাহ। এমপির নেতৃত্বে শুরু হয় স্বাক্ষর ক্যাম্পেইন। সম্প্রতি বার্কলেজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে লক্ষাধিক স্বাক্ষরসহ আবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে হয়। লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনও বার্কলেজের সাথে একাধিক বৈঠক করে।  
সম্প্রতি এ নিয়ে ব্রিটেনের হাইকোর্ট বার্কলেজের বিরুদ্ধে রায় দেয়।

Source: http://potrika.com